, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ , ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


ডি কক-ক্লাসেন ঝড়ের পরও ৪০০ হলো না প্রোটিয়াদের

  • আপলোড সময় : ২৪-১০-২০২৩ ০৬:৪৩:২৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৪-১০-২০২৩ ০৬:৪৩:২৯ অপরাহ্ন
ডি কক-ক্লাসেন ঝড়ের পরও ৪০০ হলো না প্রোটিয়াদের
আজ টস ভাগ্য পক্ষে না এলেও বাংলাদেশের শুরুটা ছিলো দারুণ। দ্রুত দুই উইকেট ফেলে প্রোটিয়াদের চেপেও ধরতে পেরেছিলো। কিন্তু এরপর খেলার পরিস্থিতি বদলে দেন কুইন্টেন ডি কক আর এইডেন মার্করাম। ডি কক তৃতীয় সেঞ্চুরিতে খেলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। তার সঙ্গে শতরানের জুটিতে মার্করামও করেন ফিফটি। তবে শেষ দিকে আসল কাজ করেছেন হেনরিক ক্লাসেন, তার উত্তাল ব্যাটিং দিশেহারা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম দিকে  চাঙ্গা থাকলেও পরে শরীরী ভাষাও নেতিয়ে পড়ে সাকিব আল হাসানদের।

আজ মঙ্গলবারও মুম্বাইর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রান বন্যায় ভাসিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। আগে ব্যাটিং বেছে  ৫ উইকেটে ৩৮২ করেছে তারা। ১৪০ বলে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৪ রান ডি ককের। মার্করাম অ্যাঙ্কর ভূমিকায় ৬৯ বলে করে যান ৬০। শেষ দিকে উত্তাল হয়ে উঠা ক্লাসেন ৪৯ বলে থামেন ৯০ রান করে। ১৫ বলে ৩৪ করে অপরাজিত থাকেন ডেভিড মিলার। 

বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে এদিন যেন খেললেন ডি কক। ১৫ চার, ৭ ছক্কার ইনিংস যেভাবে সাজিয়েছেন তাতে ছিলো না কোন সুযোগ। ডি কককে আউট করতে শুরুতেই মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে বল দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। টানা সাত ওভার করিয়ে আপ্রাণ চেষ্টাও করেছিলেন। ডি কক ধরে ফেলেন এই ফন্দি। ফাঁদে পা না দিয়ে শুরুতে ছিলেন রয়েসয়ে। সময়ের সঙ্গে পাখনা মেলে পরে হয়ে উঠেন দুর্বার। তাকে আটকানোর কোন উপায়ই পরে মিলছিল না।

খেলার আগে টস নিয়ে ছিল অনেক আকুতি। তবে ওটা তো আর নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে প্রথম পাওয়ার প্লেতে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো শুরু পেয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল দল। আগের ম্যাচে ৮৫ করা রেজা হেনড্রিকস কোন রান করা আগেই সুযোগ দিয়েছিলেন। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে স্লিপে তার ক্যাচ রাখতে পারেননি তানজিদ হাসান তামিম। টিকতে অবশ্য পারেননি। সপ্তম ওভারে শরিফুল ইসলাম দারুণ এক বলে বোল্ড করে দেন তাকে।

আউটস্যুইং হবে ভেবে খেলছিলেন রেজা, বল সোজা গিয়ে উড়িয়ে দেয় তার স্টাম্প। ফেরেন ১২ রান করে। রাসি ফন ডার ডুসেনকে নিয়ে বিপদ ছিলো। ডি কককে ফেরাতে আগেভাগে মিরাজকে এনেছিলেন সাকিব। ডি কককে থামাতে না পারলেও ডুসেনের উইকেট পেয়ে যান তিনি। ৮ম ওভারে ৩৬ রানে ২ উইকেট খুইয়ে তখন প্রবল চাপে প্রোটিয়ারা। ঠাণ্ডা মাথায় এইডেন মার্করামকে নিয়ে এই চাপ সয়ে যান ডি কক।

রানের গতি বিন্দু মাত্র পড়তে দেননি। প্রান্ত বদলে দুজনে ছিলেন চনমনে। আলগা বল পেলেও সীমানা ছাড়া করেছেন তড়িৎ। কোন সুযোগ না দিয়ে এগুতে থাকেন দুজনেই। শুরুর চাপ সয়ে দাঁড়িয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। মাঝের ওভারে স্পিন-পেস মিলিয়ে বাংলাদেশ ব্রেক থ্রোর চেষ্টা করে গেছে টানা। অনিয়মিত বোলার মাহমুদউল্লাহকে দিয়েও চেষ্টা চালানো হয়েছে। মাঝের সময়টায় হতাশ করেছেন হাসান মাহমুদ। বেশ মলিন দেখাচ্ছিল তাকে।

হাসানের বলে মার্করাম, ডি ককের চাপ সরে যাচ্ছিল। স্পিনাররাও ওই সময়টায় হয়ে পড়ছিলেন ধারহীন। সাকিব তার প্রথম স্পেলে ছিলেন সাদামাটা, দ্বিতীয় স্পেলেও তাই। তবে উইকেট পেয়ে যান। ৩১তম ওভারে চিপ শটের মতো খেলতে গিয়ে টাইমিং গড়বড় হয়ে লং অফে লিটন দাসের হাতে জমা পড়েন ৬৯ বলে ৬০ করা প্রোটিয়া কাপ্তান। ডি কক কোন সুযোগ না দিয়ে খানিক পরই স্পর্শ করেন টুর্নামেন্টে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি। এরপর হয়ে উঠেন  আরও দুর্বার।

সব বলেই খ্যাপাটের মতো ঘুরিয়েছেন এমন না। তাকে তেমন করতেও হয়নি। প্রতি ওভারেই একাধিক আলগা বল মিলেছে, সেসব কোনটাই ছাড় দেননি। ভালো বলে আবার মর্যাদা দিয়েছেন পর্যাপ্ত। হাসানের বলে তিনি যখন আউট হন দক্ষিণ আফ্রিকার সাড়ে তিনশো অনায়াসে পার করার ভিত তখন পোক্ত। সেই সাড়ে তিনশোকে আরও দূর ছাড়িয়ে নিয়ে যান ক্লাসেন-মিলার।  তাদের চার-ছক্কার ঝড়ে শেষ দশ ওভারে চলে আসে ১৪৪ রান!